ইউক্রেন যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও মারিউপোল অবরোধকালে রাশিয়ার বিমান অভিযানের নেতৃত্বদানকারী সাবেক সামরিক কর্মকর্তা মেজর জাউর গুর্তসিয়েভ (৩৪) গ্রেনেড বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। তিনি সম্প্রতি স্ট্যাভরোপল শহরের ডেপুটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
স্ট্যাভরোপলের মেয়র ইভান উলইয়ানচেঙ্কো বৃহস্পতিবার (২৯ মে) গুর্তসিয়েভের নিহতের খবর নিশ্চিত করেছেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাসের বরাতে মেহের নিউজ জানিয়েছে, বুধবার রাতে একটি আবাসিক এলাকার কাছে গ্রেনেড বিস্ফোরণে দুজন নিহত হন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন গুর্তসিয়েভ।
স্ট্যাভরোপল অঞ্চলের গভর্নর ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভ এ ঘটনাকে একটি ‘অন্ধকার দুর্ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে, এমনকি ইউক্রেনীয় নাৎসিদের দ্বারা সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কাও রয়েছে’।
রাশিয়ার আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো হত্যা ও অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান সংক্রান্ত একটি ফৌজদারি মামলার তদন্ত শুরু করেছে। রাশিয়ার তদন্ত কমিটির প্রধান আলেকজান্ডার বাস্ত্রিকিন আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের তদন্ত অগ্রগতির বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সিসিটিভি ফুটেজ রাশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী-সংশ্লিষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি পার্কিং লটে অন্য একজনের কাছে গেলে একটি বিস্ফোরণ ঘটে।
ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিওতে থাকা এক ব্যক্তি গুর্তসিয়েভ হতে পারেন। যদিও সরকারি কোনো বিবৃতিতে এটি নিশ্চিত করা হয়নি।
যুদ্ধ থেকে প্রশাসনে : ‘টাইম অব হিরোজ’ নামক একটি সরকারি কর্মসূচির অধীনে যুদ্ধবাজদের বেসামরিক প্রশাসনে রূপান্তরের অংশ হিসেবে মেজর জাউর গুর্তসিয়েভ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে স্ট্যাভরোপলের প্রথম ডেপুটি মেয়র হিসেবে নিয়োগ পান।
তার জীবনী থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি ২০২২ সালে মারিউপোল অবরোধে বিমান অভিযানের সমন্বয় করেন। সেখানে তিনি ক্ষেপণাস্ত্র নির্দেশনা প্রযুক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে ‘নিখুঁতভাবে আঘাত হানা ও দক্ষতার উৎকর্ষতা’ বাড়িয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
১৯৯০ সালে ভ্লাদিকাভকাজ শহরে জন্মগ্রহণকারী গুর্তসিয়েভ ২০০৭ সালে রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ২০১২ সালে সিগন্যাল কর্পসের এস এম বুদিয়োনি সামরিক অ্যাকাডেমি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তার ঝুলিতে রয়েছে ‘অর্ডার অব কারেজ’সহ একাধিক সামরিক সম্মাননা।
মূলত তার নিহতের ঘটনাটি রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের ঝুঁকি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএনএস